শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭

এডলফ হিটলার

গল্পটা পথে পাওয়া
___________________
আজ চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরীতে এক বৃদ্ধ ব্যক্তির সাথে দেখা হয়। বয়স ষাট কিংবা সত্তর ছোঁবে।মাথায় চুলের কিছুটা ঘাটতি আছে।চোখে একটা সেকেলে চশমা। সম্ভবত একটু বেশিই বই পড়ে। আমি অবশ্য এই রকম ব্যক্তিদের সঙ্গ সব সময় প্রত্যাশা করি। সে (বৃদ্ধ) লাইব্রেরিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো, স্যার "হিটলার " বইটা আছে কি? লাইব্রেরিয়ান বললো, "স্যার দয়া করে একটু অপেক্ষা করুণ, আমি খুঁজে দেখছি"। তখন আমি মেডিকেল থ্রিলারের জনক রবিন কুকের 'ব্রেইন'এর পাতাই মুখ গুঁজে বসা ছিলাম। আমার তখন মনে হল বৃদ্ধ লোকটির সঙ্গে সঙ্গ দেওয়ায় বোধ হয় ভালো হবে। তাছাড়া সচরাচর এই রকম বৃদ্ধদের দেখা কমই মিলে। আমি সকল বৃদ্ধদের সাথে মিশতেই ভাল লাগে।তবে ইতিহাস বাহক বৃদ্ধ পেলে তো কথাই নেই! যদিও এই প্রজন্মের কিছু ছেলেরা বৃদ্ধদের এড়িয়ে চলে। আমি মনে করি তাদের কাছে লুকিয়ে আছে সত্য, না দেখা ইতিহাস। আমি প্রথম তাকে সালাম দিলাম। দাদা বলেই সম্বোধন করলাম। দাদা আপনি যে হিটলার খুঁজছেন! আমরা তো তাকে ঘৃণিত ব্যক্তি বলেই যেনে এসেছি!
তোমার নাম কী?
আমি মাহ্দী কাবীর
তুমি কী কর?
দাদা,আমি ছাত্র।সিটি কলেজে পড়ি।
তুমি কি এই কলেজের ইতিহাস জানো?
আমি বললাম কিছুটা জেনেছিলাম।
এই কলেজের পূর্বেকার নাম ছিল কি বলতে পারবে?
না, দাদা।
নাইট কলেজ।
তখন আমাদের আড্ডাটা জমে গিয়েছিল।
সে বললো হিটলারকে কেন বিশ্বের ঘৃণিত ব্যক্তি বলা হয় জানো?
দাদা, হিটলার ইহুদীদের নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে তাছাড়া তার কারণে ২য় বিশ্ব যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায়?
হ্যা এই সব ঘটনার জন্য আমরা তাকে ঘৃণা করতেই পারি। কিন্তু জীবনী বলে অন্য কথা। আমার মনে হয় প্রত্যেকের হিটলারের জীবনী জানা উচিৎ।
তুমি কি জানো হিটলার নোবেল প্রাইজ পেয়েছিল।( চশমাটা খুলে নড়েচড়ে বসে) অবশ্য সে নোবেল প্রত্যাখ্যান করেছেন।হিটলারের মন্দ দিক যেমন আছে, ভালো দিকও তেমন রয়েছে।আমি তার ভালো দিক গুলিকে অনুসরণ করি। তার(হিটলার) ছিল দেশ ও সেনাদের পরিচালনা করার সুন্দর কৌশল। সে(হিটলার) ছিল গরীব ঘরের ছেলে কি ভাবে সে এই যায়গায় পৌছাই তোমাদের জানতে হবে। তিনি মনে করেন যুদ্ধ-ই শান্তি এনে দিতে পারে।
তাছাড়া আমি পাকিস্তান আমলে একজন মিলিটারি ছিলাম। মিলিটারি হিসেবে আমি হিটলারের আদর্শ গ্রহণ করি। আমি গ্রহন করি তার আপোষহীন সংগ্রাম।
-কিন্তু দাদা বোমা মেরে কি বীরত্ব প্রকাশ করা যায়? বোমা তো উপর থেকে যে কেউ মারতে পারে। যে কখনো একটা মাছি মারিনি সেও। দাদা, আমি মনে করি এটা তাদের ভীরুতা! প্রকৃত যোদ্ধা সে-ই, যে তলোয়ার হাতে লড়ে।
- হ্যা তুমি ঠিক বলেছো। তবে জাপানের হিরশিমা ও নাগাসাকি কিন্তু হিটলার ধ্বংস করিনি।
আমাদের আড্ডা থামিয়ে দিয়ে লাইব্রেরিয়ান এসে বললো, স্যার আপনার বই!
বই হাতে পেয়ে সে (বৃদ্ধ) বলল, অবশ্য বইটা আমার কাছে ছিল। কিন্তু আমার কোনো বন্ধু বোধ করি বইটি নিয়ে গেছে। তাই খুঁজে পাইনি।
চলমান.....
-Written By Mahdi Kaabir

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন