মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭

স্বাধীনতা তুমি


-মাহ্দী কাবীর
স্বাধীনতা তুমি
ধূসর দুপুরে শুকিয়ে যাওয়া
কয়েক গুচ্ছ কৃষ্ণচূড়া ফুল।
স্বাধীনতা তুমি
শিয়াল শুঁকুনের ছিড়ে নেওয়া
এক রমণীর কয়েক মুঠো চুল।
স্বাধীনতা তুমি
কাকতন্দ্রা হয়ে অপেক্ষারত
তীর্থের কাকের প্রিয় সেই মুখ।
স্বাধীনতা তুমি
একটা ক্ষত, একটা ক্ষতকে
ভুলে তোমাকে পাওয়ার সুখ।।

চট্টগ্রাম
রচনাকাল : ১৬ই ডিসেম্বর, ২০১৭

দেশ কিনেছি প্রাণে

-মুহম্মদ কবীর সরকার

দেশ কিনেছি প্রাণেরে ভাই দেশে কিনেছি প্রাণে
রক্ত নদীর বন্যার স্রোতে- নয়তো কারো দানে।
দেশ কিনেছি ভাষণ দিয়ে আমার প্রাণের নেতার
বাঙ্গালিরা ঝাঁপিয়ে পরে- লক্ষ্য ছিল জেতার।
দেশ কিনেছি রক্ত দিয়ে আমার তাজা ভায়ের
দেশ কিনেছি সম্ভ্রম দিয়ে লক্ষ বাংলা মায়ের।

অন্যায় আর ভাষা দখল
বেরসিক আর পায়ে শিকল- সব ভেঙ্গেছি গানে।
আধার মাড়িয়ে ভোর এনেছি
লাল-সবুজের দেশ কিনেছি- পাইনি কারো দানে।

দেশ কিনেছি প্রাণেরে ভাই দেশ কিনেছি প্রাণে
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের 'জয় বাংলা' গানে।।

শিক্ষার্থী :চট্টগ্রাম
রচনাকাল: ১৬ই ডিসেম্বর, ২০১৭।

বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭

কবিতারা জেগে আছে

-মাহ্দী কাবীর
আমি তুমি অতঃপর বৃষ্টি...
আমাদের মধ্যে ছিল অনেকটাই মিল।
অতঃপর কিছু দুষ্টু জল
তোমার ঠোঁটে ঠোঁট ঠেকে অবিরাম ঝরছিল
ঐ বৃষ্টির জল আমি কুড়িয়ে ছিলাম।
বলেছিলাম, 'অনু দেখো জলটা কত্ত নীল!'
তুমি বললে, 'নীল,তুমি সত্যিই বোকা
ওটা নীল জলের অনু!'
আমি বললাম,
'ওটা তোমার প্রেমের স্পর্শে নীল হয়েছে
তোমার স্পর্শে সব কিছু নীল হয়?'
তুমি মৃদু হেসে বললে,
'তুমি বুঝি নীল হচ্ছো?'
যদি হয় তবে!
তুমি বললে, 'তাহলে তুমি ভালোবাসা বুঝোইনা
কিছু বিষাদ নাও, তবেই ভালোবাসা পরিপূর্ণ হবে।'
আমি বললাম, 'আমি তোমায় ছাড়া
কিছুই ভাবতে পারি না অনু।'
অতঃপর আমায় জড়িয়ে ধরে
তুমি বললে,'আমি তোমারি থাকবো,
যদি তুমি আমায় তোমার হৃদয়ে ঠাই দাও।'
তখন তুমি তোমার যুগল ঠোঁটে আমার ঠোঁট রেখে ,
যুগল চোখে চোখ রেখে, যুগল হাতে হাত রেখে
আমায় বন্ধী করেছিলে।
তাই দেখে হয়তো মেঘেরাও লজ্জা পেয়েছিল
তাই বোধ হয় সে আর বাতাসের ওপর ভর করে থাকতে পারেনি।
গলে গেলো প্রেমের উষ্ণতায়, আকাশকে নীল করে দিয়ে-
ছোঁতে চাইলো বৃষ্টির ছলে তোমায়।
সহসা বৃষ্টি থমকে দাঁড়ালো,
থমকে দাঁড়ালো তোমার আমার প্রেম।
না, তা বললে ভুল হবে তোমার কাছে তো প্রেম অনুভব করার বিষয়।
হয়তো আজও সে আছে তোমাতে আমাতে।
অথচ দেখো, আজ তুমি আর আমি শত আলোক বর্ষ দূরে।
ইচ্ছাই হোক অনিচ্ছাই হোক,
তুমি আজ দূরে,বহু দূরে...
অতঃপর আমি, আর অদৃশ্য তুমি, অর্থাৎ তোমার ছায়া।
অতঃপর কবিতা।
অদৃশ্য তুমি আর কবিতারাই বুঝি ভালোবাসা ছিল।
হয়তো তুমি কবিতাদের কথা-ই বলেছিলে
তারপর হারিয়ে গেলে কবিতাদের ভিড়ে।
যতদিন যাচ্ছে ততো তোমায় ভেবে কবিতা জন্ম নিচ্ছে।
প্রেমের নব প্রজন্ম কবিতা!
প্রতিটি সিগারেট পুড়িয়ে জন্ম হয় এক একটি কবিতা।
শুধু তোমায় ভেবে তারা আজও জেগে আছে,
তারা আজও কথা কয় তোমার হয়ে
এর সাথে আমিও আরেকবার নীল হয়।
১৪/২/১৭ইং
চট্টগ্রাম।
উৎসর্গ : সুদীপ তন্তুবায় নীল ও অনুরাধা অনু।(ভারত)

বুধবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৭

কবিতার জননী

এই মেয়ে...
আমি তোমায় বলছি!
তুমি কি আমার কবিতার উপমা হবে?
তোমায় ভেবে কবিতা জন্ম দিব!
তুমি হবে কবিতার জননী!
আর আমি ডট ডট ডট...
অতঃপর তোমায় নিয়ে আর ভাববো না।

মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৭

বিয়ের অ্যাসাইনমেন্ট


-মাহ্দী কাবীর
পড়া লেখা শেষ করেছিস তো বাবা,এবার একটা বিয়ে কর।
- কী বল মা! আমার পড়া লেখা শেষ হয়েছে ক্যারিয়ার তো শুরুই করিনি! তারপর চাকরী, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। মা তুমি ও না।
- বাবা আমাদের এত অর্থ সম্পদ কি করবো তুই যদি কাজ করেই খেতে হয়।
- ওটা তো বাবার সম্পত্তি আমার তো কিছুই নেই।
- তাছাড়া সমাজ বিজ্ঞান নিয়ে প্যারিস থেকে ডিগ্রি এনেছি বিয়ে করে বাবার সম্পত্তি খাওয়ার জন্য!
- তুই যা-ই বলিস না কেন, আমি তোর জন্য মেয়ে দেখছি!
-মা আমাকে অন্তত আরো কয়েকটা বছর ভাবতে দাও।
- তুই যা পারিস কর আমি আর কিছুই বলবো না।

খুব সহজে বিয়ে করা আমার কাছে খুব একটা সহজ ছিল না। জীবন সঙ্গি মন মতো না হলে ঘরে অশান্তি লেগেই থাকে। কেননা বিয়ের পর মানুষের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে। সে পরিবর্তন হতে পারে ইতিবাচক বা নেতিবাচক। জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেছেন পৃথিবীতেই সেই ব্যক্তি-ই সুখী যার জীবনসঙ্গী মনের মতো হয় আবার সেই ব্যক্তি-ই অসুখী যার জীবন সঙ্গী মনের মত হয়না। কিন্তু আমি কীভাবে মাকে বুঝাবো বিয়ে করা এতো সহজ জিনিস নই। আপনি হয়তো দেখে থাকবেন বিভিন্ন দেশে বিবাহবিচ্ছেদ অহরহ ঘটে যাচ্ছে। তার এক মাত্র কারণই কিন্তু অসুখী। যখন দম্পতী যুগলে অমিলের বাসা বাধে, একে অপরকে বুঝতে চাইনা তখন-ই সেই অসুখ দেহে মনে ভর করে। আবার এটাও দেখে থাকবেন অনেক বৃদ্ধ দম্পতী যুগল আছে যারা এক মুহূর্তের জন্য কেউ কাউকে ছাড়া বাচতে পারেনা।
তাছাড়া আমি সমাজ বিজ্ঞানী সমাজকে নিয়ে আমার ভাবতে হবে তারপর বিয়ে। তাহলে আমার প্রথম এসাইনমেন্ট কি দিয়ে শুরু করা যেতে পারে! স্কুল ছাত্রদের আচার আচরণ স্বভাব চরিত্র সেটা দিয়েই শুরু করবো নাকি? বাংলাদেশের স্কুলে কি রকম পাঠ দান হচ্ছে সেটাই ভালো হবে।
আর হ্যা বলে রাখি আমি কিন্তু টাকা ও শিক্ষা দিয়ে জিডিপি নির্ণয় করি না। আমি সুখ দিয়ে জিডিপি নির্ণয় করি। আর হ্যা আমার নাম-ই তো বলা হল না আমি কাবীর। তাছাড়া পাহাড়ের প্রতি ও আমার ছোট থেকে-ই জোক ছিল। পাহাড়ি ছেলেমেয়েরা কীভাবে পড়ছে।
চলমান.....

নারী ও ফুল

তুমি ফুল হয়ওনা ঝরে যাবে
নয়তো ছিঁড়ে নিবে,
তুমি আদর্শ নারী হও।
-মাহ্দী কাবীর।

খুনি

থ্রিলার গল্প -খুনি
মুহম্মদ কবীর সরকার

জনমানব শূন্য দুর্গম পাহাড়ি পথে হেঁটে চলছে দুই ভাই। এক সময় তাদের একটা সুন্দর নাম ছিল। ছিল বেশ কিছু স্বপ্ন। বাবা ছিল, মা ছিল, বোন ছিল, ছিল একটা কুড়ে ঘর। সেখানে মাখামাখি করে বেঁচে থাকতো ভালোবাসারা। অনাহারে, শিক্ষাহীন, চিকিৎসাহীন ও এক বস্ত্রে দিনের পর দিন যেত, তবুও তাদের ভালোবাসার কমতি ছিল না। এখন তাদের সুন্দর কোনো নাম নেই।নেই কোনো ভালোবাসা। এখন তারা অজানা পথের পথিক। এখন তাদের পরিচয় ফেরারি আসামি!এখন তারা শুধুই খুনি!
দশবছরের এক শিশু তার ডান হাতের মাধ্যমাঙুল ধরে অজানা পথে হাটছে আরেকটি ৫ বছরের শিশু। তার বাম হাতে একটা লাশের মুণ্ডু(মাথা)। খানিক বাদে একফোটা করে রক্ত ঝরে পড়ছে সেই মুণ্ডু থেকে।যেন ঘন্টা খানেক আগে কারো দেহ থেকে আলাদা করা হয়েছে এই মুন্ডুটা। খানিক বাদে বাদে টপ টপ করে রক্ত ঝরে পড়ছে। তাজা রক্ত।

পরের দিন সারাদেশের প্রতিটি পত্রিকায় বড় বড় হেডলাইনে ছাপানো হয় "১০ বছরের ছেলে কাবীরের হাতে এক সেনাবাহিনী খুন" কাবীর, সেনাবাহিনীর মুণ্ডু ও তার ছোট ভাই ওমর(৫) নিখোঁজ। যে খুঁজে দিবে তাকে ১ লাখ টাকা পুরুষ্কৃত করা হবে। কেন খুন হয়েছে সেই সেনাবাহিনী তা কেউ জানে না, এমনকি কেউ জানতে ও চায় নি! এখন জনগণ, মিডিয়ার কাজ শুধুই দুটো ছেলেকে খুঁজে বের করা। সাথে ওই মুণ্ডুটা। কারো কোনো জানার আগ্রহ নেই, কেনো দুটো অবুঝ শিশু খুনি? যাদের খেলার কথা ছিল চোর পুলিশ। কেন তারা খুনি? কে তাদের মানসিক বিকাশের ব্যাঘাত ঘটিয়েছে? তারা আজ বিকৃত মস্তিষ্কের দুটো নাবালক শিশু। আজ তাদের হাতে কাটা মুণ্ডু নিয়ে ঘুরার সুযোগ করে দিয়েছে এই পরিবেশ, এই দেশ।

ওমর বললো, 'ভাই আমার পানি তৃষ্ণা পেয়েছে আর কত হাঁটবো! " এই তো আরেকটু হাঁটলেই আমরা গন্তব্যে পৌছে যাবো।
-পানি তৃষ্ণা পেয়ে তো!
-পানি পান করবি?
- হ্যাঁ।
পানি কোথায় পাই। আশেপাশে তো জঙ্গল ছাড়া আর কিছুই নেই। রক্ত পান করতে পারবি?
-রক্ত পান করা যায় নাকি?
- তাছাড়া এটা মানুষের কল্লা!
সে আমাদের রক্ত পান করেছে, আমাদের সুখ খেয়েছে, ভালোবাসা খেয়েছে, আমাদের স্বপ্নগুলি খেয়েছে। আর তুই এই অমানুষের রক্ত পান করতে পারবিনা?
- ওমর(৫) বললো, ভাই তুই যা বলবি তাই করতে আমি প্রস্তুত। ওটা শুধু অমানুষের রক্ত তো দে পান করে নিচ্ছি।
অতঃপর ওমর সেনার মুণ্ডুর রক্ত দিয়ে তৃষ্ণা মিটালো।

অজানা পথে হেঁটে চলছে এই দুটো শিশু। তারা শুধুই জানে তাদের গন্তব্য জঙ্গলের পর নদীর ওই পাড়ে। যেখানে এই দেশের আইন চলে না। যেখানে অচল এই দেশের শাসন । রক্ত শূন্য মুণ্ডু হাতে হেঁটে চলছে। অতঃপর আরেকটি রাত। নির্জন ভয়ঙ্কর জঙ্গল। চুপটি করে একটি গাছ তলায় আশ্রয় নিল তারা। অনাহারে ও ক্লান্ত হয়ে ভাইয়ের বুকে ঘুমিয়ে গেছে ছোট্ট ছেলেটি। যার কাছে পৃথিবী অধরা। হ্যাঁ সে পৃথিবীকে দেখেছে, পৃথিবীকে দেখেছে নিষ্ঠুর, নির্মম। আজ এই ভয়ঙ্কর রাতে তাদের কোনো ভয় নেই। কেননা এর চেয়ে ও কঠিন রাত তাদের ভয় গুলিকে চোরে করে নিয়েছে। চুরি করে নিয়েছে তাদের শিশুত্বকে। আজ তারা শিশু নয়। আজ তারা পাঁচ ও দশ বছরের যুবক । পৃথিবী তাদের সুন্দর মস্তিষ্কে জন্ম দেয়নি, আজ তারা পৃথিবীকে আবার নতুন করে জন্ম দিবে।

ছোট্ট ছেলেটি ভাইয়ের বুকে ঘুমিয়ে মায়ের বুকের সাধ নিচ্ছে।

মা-বাবা, বড় বোন ও এই দুই ভাই মিলেই তাদের পরিবার ছিল। ভোরে মায়ের কুরান তিলাওয়াতে ঘুম ভাঙ্গতো। শিশিরে স্নান করা নগ্ন পায়ে ছোটে যেত তিন ভাই বোন পাড়ার মক্তবে। মক্তব শেষ করলেই সারা দিন তাদের খেলাধুলা, ঝগড়া আর মায়ের বকনি। কেননা তাদের স্কুলে পড়া নিষেধ ছিল। তাই তারা স্কুলে যেতে চাইলে ও পারেনি। এটা সরকারের আদেশ। তাদের সকল সম্পত্তি এখন জ্ঞানি ধার্মিকদের দখলে। এটাও সরকারের আদেশ।বাবা সারাদিন নিজের ক্ষেতে অন্যের গোলামি করতে হতো। বেলা শেষে অর্ধেক মজুরি নিয়ে বা না নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হতো।এটা ও সরকারের আদেশ। সারাদিন কাজ করে নিজের ক্ষেতে, দুই মুঠো খাবার ও জুটতো না।নিজের সকল ফসল তুলতে হত তথাকথিত জ্ঞানী ধার্মিকদের কুঠুরিতে। তাদের বুকের ওপর বসে জ্ঞানী ধার্মিক ও সরকার চুষে খেতো তাদের তাজা রক্ত। অতঃপর ফেলে দিত কঙ্কালসার। সারাদিনের মজুরী নিয়ে রাতে যেতো বাজারে। দোকানীরা তাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতো চড়া দামে। এই ভাবেই তারা বেঁচে ছিল যদি তাকে বেঁচে থাকা বলে।তাদের নিষিদ্ধ করা হল মাছ ধরা, কৃষিকাজ এমন কি নাগরিকত্ব ইত্যাদি থেকে।তারা জানতো না কেন তাদের ওপর এত আগ্রাসন। পৃথিবীর কোনো ধর্ম কি এসব শিক্ষা দেয়? ধর্ম তো মানুষকে সভ্য বানাই, পাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। তাহলে তারা( তথাকথিত জ্ঞানী ধার্মিক) কি নিজের ধর্ম পালনে ব্যর্থ?
সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে ও তারা(সরকার) ক্ষান্ত হয়নি। তাদের বাঁচতে দিল না। এক রাত্রে সেনাবাহিনী ও তথাকথিত জ্ঞানী ধার্মিকরা এসে হুমকি দিয়ে গেল" তোরা এই দেশ থেকে চলে যা ও এই দেশ তোদের নই। তোদের দেশ বাংলাদেশ।" ১৫ শতাব্দী থেকে বাস করে আসছে তারা।আজ বলছে এটা তাদের দেশ নই। কিন্তু তারা বাপদাদার ভিটামাটি থেকে যায়নি।

তারপর সেনা ও তথাকথিত জ্ঞানী ধার্মিক লোকেরা চালাই তাদের নিঃসংশয় অপকর্ম ও তাণ্ডব।
সেই রাতে এই বাচ্চাদের জীবনে ঘটে গিয়েছিল সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ঘটনা। বিকট শব্দ করে একদল ইউনিফর্ম পড়া সেনা বলপূর্বক প্রবেশ করলো তাদের ঘরে। তাদের বাবা বাধা দেওয়া তাকে গুলি খেয়ে মরতে হয়। তাদের মা ও বোনের ওপর নির্যাতন চালাই। তাদের এমন কিছুও দেখতে হল যা কখনো দেখবে তারা ভাবিনি। এই দেশ তাদের দেখিয়েছে। আচ্ছা দেশ নাকি মায়ের মত তাহলে দেশ কেন তার সন্তানের এত অবহেলা করে। দুটো ছেলে ধরে তাদের সামনে বিবস্ত্র করা হয় তাদের মা বোনকে। নির্মম ভাবে অত্যাচার করা হয়। এই কষ্ট সহ্য না করতে পেরে মারা গিয়েছিল তাদের দিদি। আধমরা হয়ে পরে ছিল গর্ভধারিণী মায়ের বস্ত্রহীন নিথর দেহ। একেরপর এক তাদের অত্যাচার চালাচ্ছিল। সবাই যখন চলে যাই তখন একজন সেনা ছিল সুযোগ বুঝে ওই সেনার দেহ থেকে মাথা আলাদা করে দেয় বাচ্চারা।
-চলমান

প্রকাশিত কিছু লেখা

কুয়াশার ঝোঁপে এক উঠোন রোদ

কুয়াশার ঝোঁপে এক উঠোন রোদ
-মাহ্দী কাবীর
কুয়াশার ঝোঁপে লুকিয়ে দোয়েল,
বাগানবিলাস ফুল
মাকড়সা জালে শিশির স্নানে খেয়ে যায় শত দুল।
জমে আছে ফুল মেঘকালো চুল, শুষ্ক ঠোঁট কী চেয়ে?
দীর্ঘ রজনী পাড়ি দিয়ে যেন সূর্য উঠলো পিছিয়ে।
চিকচিকে রোদে মাকড়শা জালে মুক্তোরহার বুনে
কুয়াশার ঝোঁপ ভাঙ্গে যে চুপ প্রকৃতিরা জেনে শুনে!
ক্ষুধার্ত বাতাস ছুটে চলে যায় পাতা ঝরার দেশে
কুয়াশার ঝোঁপে ঘুমিয়ে পাহাড় জাগলো অবশেষে।
ভাঙ্গলো আজ পাখিদের ঘুম, কুয়াশার অবরোধ
শিশিরের গায়ে উপচে পড়লো উঠোন ভরা রোদ।

শনিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৭

এডলফ হিটলার

গল্পটা পথে পাওয়া
___________________
আজ চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরীতে এক বৃদ্ধ ব্যক্তির সাথে দেখা হয়। বয়স ষাট কিংবা সত্তর ছোঁবে।মাথায় চুলের কিছুটা ঘাটতি আছে।চোখে একটা সেকেলে চশমা। সম্ভবত একটু বেশিই বই পড়ে। আমি অবশ্য এই রকম ব্যক্তিদের সঙ্গ সব সময় প্রত্যাশা করি। সে (বৃদ্ধ) লাইব্রেরিয়ানকে জিজ্ঞেস করলো, স্যার "হিটলার " বইটা আছে কি? লাইব্রেরিয়ান বললো, "স্যার দয়া করে একটু অপেক্ষা করুণ, আমি খুঁজে দেখছি"। তখন আমি মেডিকেল থ্রিলারের জনক রবিন কুকের 'ব্রেইন'এর পাতাই মুখ গুঁজে বসা ছিলাম। আমার তখন মনে হল বৃদ্ধ লোকটির সঙ্গে সঙ্গ দেওয়ায় বোধ হয় ভালো হবে। তাছাড়া সচরাচর এই রকম বৃদ্ধদের দেখা কমই মিলে। আমি সকল বৃদ্ধদের সাথে মিশতেই ভাল লাগে।তবে ইতিহাস বাহক বৃদ্ধ পেলে তো কথাই নেই! যদিও এই প্রজন্মের কিছু ছেলেরা বৃদ্ধদের এড়িয়ে চলে। আমি মনে করি তাদের কাছে লুকিয়ে আছে সত্য, না দেখা ইতিহাস। আমি প্রথম তাকে সালাম দিলাম। দাদা বলেই সম্বোধন করলাম। দাদা আপনি যে হিটলার খুঁজছেন! আমরা তো তাকে ঘৃণিত ব্যক্তি বলেই যেনে এসেছি!
তোমার নাম কী?
আমি মাহ্দী কাবীর
তুমি কী কর?
দাদা,আমি ছাত্র।সিটি কলেজে পড়ি।
তুমি কি এই কলেজের ইতিহাস জানো?
আমি বললাম কিছুটা জেনেছিলাম।
এই কলেজের পূর্বেকার নাম ছিল কি বলতে পারবে?
না, দাদা।
নাইট কলেজ।
তখন আমাদের আড্ডাটা জমে গিয়েছিল।
সে বললো হিটলারকে কেন বিশ্বের ঘৃণিত ব্যক্তি বলা হয় জানো?
দাদা, হিটলার ইহুদীদের নৃশংস ভাবে হত্যা করেছে তাছাড়া তার কারণে ২য় বিশ্ব যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যায়?
হ্যা এই সব ঘটনার জন্য আমরা তাকে ঘৃণা করতেই পারি। কিন্তু জীবনী বলে অন্য কথা। আমার মনে হয় প্রত্যেকের হিটলারের জীবনী জানা উচিৎ।
তুমি কি জানো হিটলার নোবেল প্রাইজ পেয়েছিল।( চশমাটা খুলে নড়েচড়ে বসে) অবশ্য সে নোবেল প্রত্যাখ্যান করেছেন।হিটলারের মন্দ দিক যেমন আছে, ভালো দিকও তেমন রয়েছে।আমি তার ভালো দিক গুলিকে অনুসরণ করি। তার(হিটলার) ছিল দেশ ও সেনাদের পরিচালনা করার সুন্দর কৌশল। সে(হিটলার) ছিল গরীব ঘরের ছেলে কি ভাবে সে এই যায়গায় পৌছাই তোমাদের জানতে হবে। তিনি মনে করেন যুদ্ধ-ই শান্তি এনে দিতে পারে।
তাছাড়া আমি পাকিস্তান আমলে একজন মিলিটারি ছিলাম। মিলিটারি হিসেবে আমি হিটলারের আদর্শ গ্রহণ করি। আমি গ্রহন করি তার আপোষহীন সংগ্রাম।
-কিন্তু দাদা বোমা মেরে কি বীরত্ব প্রকাশ করা যায়? বোমা তো উপর থেকে যে কেউ মারতে পারে। যে কখনো একটা মাছি মারিনি সেও। দাদা, আমি মনে করি এটা তাদের ভীরুতা! প্রকৃত যোদ্ধা সে-ই, যে তলোয়ার হাতে লড়ে।
- হ্যা তুমি ঠিক বলেছো। তবে জাপানের হিরশিমা ও নাগাসাকি কিন্তু হিটলার ধ্বংস করিনি।
আমাদের আড্ডা থামিয়ে দিয়ে লাইব্রেরিয়ান এসে বললো, স্যার আপনার বই!
বই হাতে পেয়ে সে (বৃদ্ধ) বলল, অবশ্য বইটা আমার কাছে ছিল। কিন্তু আমার কোনো বন্ধু বোধ করি বইটি নিয়ে গেছে। তাই খুঁজে পাইনি।
চলমান.....
-Written By Mahdi Kaabir

রবিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৭

শীত এসেছে আবার

-মাহ্দী কাবীর
ধুম পড়েছে পিঠা পুলির
রসে ভরা খেজুরের,
ঘুম সেরেছে খুকু-খুকির
অপেক্ষা তো সে ভোরের!

ক্ষীর কুলি ও পিঠা পুলি
ভাঁপা পিঠার সমাহার,
শিশিরসিক্ত মিষ্টি রোদে
শীত এসেছে (যে) আবার!

শিক্ষার্থী : সরকারী সিটি কলেজ,চট্টগ্রাম।