সোমবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৭

নালিশ

মুহম্মদ কবীর সরকার
এক ছিল খুকি।সুন্দর সুন্দর দিন গুলি তার যাচ্ছিল।কখনো পুতুল সোনার বিয়ে দিয়ে। কখনো টিয়ামনির বিয়ে দিয়ে, কখনো বা প্রজাতির সাথে ভাব করে। প্রজাতির রং গায়ে মাখতো। তার ঘরে যেন উৎসব বারো মাসই লেগে থাকতো।পুতুল সোনার রঙিন শারী, খোপায় গাধা ফুল, লাল টিপ, পায়ে নুপুর কত্তো সুন্দর করে সাজাতো প্রতিদিন। জামাইবাবু কাগজের নৌকা দিয়ে উজান ডিঙি বেয়ে আসতো, জামাইবাবুর জন্য কত কি রান্না করতো পোলাও- কোরমা ডিম, দুধ আরো কত কি! জামাই বাবু এক বার খেলে আর ভুলতে পারতো না।
কিন্তু ইদানীং বেশ সমস্যায় পড়েছে খুকি। তার এই সুখে যেন কারো নজর লেগেছে। বিয়ে বিয়ে উৎসব আর টিকছেনা, পাজে টিকটিকি নাকি বরের বাপের কাছে বদনাম করেছে তাই তারা বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছিল না।অবশেষে রাজি হল।অপর দিক দিয়ে নেমন্তন্ন খাওয়ার জন্য আসার পথে বিষ পিঁপড়ের দল নাকি তার প্রাণের সখা গঙ্গাফড়িঙকে কামড়ে দিয়েছিল। জ্বালা শেষ নয় ইদানীং কেউ যেন এসে চুপিচুপি তার বিয়েবাড়ি সাঙ্গ করে দেয়, কিন্তু সে বুঝতে ও পারছেনা ধরতে ও পারছে না। খুকি ও তার বন্ধুরা মিলে
টুনটুনিকে এই রহস্য উন্মোচনের জন্য গোয়েন্দা হিসেবে নিয়োগ করলো। কয়েক দিন পড় টুনটুনি উন্মোচন করলো যে, কিছু দুষ্টু ইঁদুর আর একটি বিড়াল প্রতি রাতে তার সাজানো বিয়েতে বাড়িতে লুকোচুরি খেলে। মরণ মরণ লুকোচুরি খেলা, ধরা পড়লেই কেলু।
খুকি ভাবলো দুষ্টু বিড়াল ও ইঁদুর কে শাস্তি দিতে হবে।
সভা বসলো...
টিয়া বললো সখি চল আমরা একটা ফাদ দিয়ে ধরি।
খুকিমনি বললো ফাদ! কি রকম হতে পারে রে টিয়ামনি।
টিয়ামনি বললো আমরা বাজার থেকে একটি ফাদ কিনে আনি!
খুকি মনি : এই ভাবে সব দুষ্টুরা ধরা পরবে না। তাছাড়া তোর মনে নেউ কিছুদিন আগে ফড়িঙ কে কামড়ে দিয়েছিল পিপড়ে, ওই পাজি পিঁপড়ে, টিকটিকির একটা বিহিত করতে হবে।
টিয়ামনি বললো তবে কি করবি লো সই..
তোমরা সবাই ভাবো দেখি কার মাথায় কি আসে।
টুনটুনি, গঙ্গাফড়িং, প্রজাপতি,ডগি, টিয়ামনি ও খুকি মনি যেন আজ মহা ভাবনায় বসলো।
অতঃপর সবাই একে একে সবার প্লান বললো,
কোনোটাই মন মত হচ্ছিল না।
অতঃপর টুনটুনি উচ্চস্বরে বললো আমার মাথায় প্লান আসছে।
খুকি মনি ও টিয়ামনি সমস্বরে বলে কি?
টুনটুনি গুনগুনিয়ে কি যেন বললো সবাইকে । ডগি শুনে হাত তালি দিতে লাগলো।টুনটুনি বললো শেষ কাজটা ডগি তোমাকেই করতে হবে।
ডগি শুনে নাচতে শুরু করলো। ডগির নাচ দেখে, গঙ্গাফড়িং মনের শেষে উড়তে লাগলো।কোথা থেকে এক উটকো ব্যাঙ এসে কিছু না বুঝেই ঘ্যাঙরঘ্যাঙে গান ধরলো। গান মন্দ চলছিল না। কিন্তু একটু পরেই
টুনটুনি উচ্চস্বরে বললো থামো থামো! আমাদের এখনি কাজে নামতে হবে আমাকে এক টুকরো মিঠাই দিতে হবে। তাহলে আজ থেকে মিশন শুরু।
ডগি তোমায় যা বললাম মনে আছে তো।
ডগি ডগডগিয়ে বললো হ্যা টুনটুনি মনে আছে।
টুনটুনি একটি ওয়ালে ফাদ হিসেবে একটু মিঠাই রাখলো। কিচ্ছুক্ষণ সবগুলি দুষ্টু পিঁপড়েরা মিঠাই খেতে ভিড় জমালো।
তা দেখে যে টিকটিকি বদনাম করছি সে সব কটি বিষ পিপড়ের দলকে হাপুস হুপুস করে ধরতে লাগলো। টিকটিকির দৌড় দেখে ইদুরের দল ছোটে এসে খপ করে ধরে ফেললো। মেরে ফেললো।
অমনি দুষ্টু বিড়াল কোথা থেকে উড়ে আসলো কেউ দেখেনি, কেউ খেয়াল করিনি। এক লাফে এসে ঘাড় মটকালো ইঁদুরের। সেটা সুন্দর করে খেতে লাগলো।
অমনি শিশ বাজালো টুনটুনি।
অমনি
আড়াল থেকে ডকি এক আঘাতে বিড়ালের পটল তুললো। বিড়াল -ইদুর লুকোচুরি সাঙ্গ করলো।
তা দেখে খুকি মনি ও টিয়া মনির হাসি কে থামায়!
অবশেষে খুকি মনির নীড়ে শান্তি ফিরে এলো।
তারপর সবাই ধরলো আজ টুনটুনির বিয়ে হবে।
তাহলে বরকে?
যায় যায় দিনে প্রকাশিত

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন